ইসমাইল মাহমুদ, মৌলভীবাজার: প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ. এম. এম. নাসির উদ্দিন বলেছেন, ‘এখন আর আগের মতো ভোট হবে না। আমরা সর্তক করে দিচ্ছি এ ব্যাপারে অনড় থাকব। কোনো ছাড় দেয়া হবে না। আমাদের লক্ষ্য একটাই, সুষ্ঠু, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেওয়া। এ নিয়ে আমাদের অন্তরে কোনো দ্বিধা দ্ব›দ্ব নেই।’ তিনি বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় মৌলভীবাজারের বেঙ্গল কনভেনশন হলরুমে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আইসিটি ব্যবহারে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়েরর সক্ষমতা বৃদ্ধি (সিবিটিইপি) প্রকল্প আয়োজিত ‘ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় চ্যালেঞ্জ এবং চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘আমরা কোনো দল, গোষ্ঠী বা ব্যক্তিকে সহযোগিতা করার জন্য মাঠে নামিনি। আমরা মাঠে নেমেছি একটা সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচনে জন্য। যারা নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত থাকবেন তাদের এবং দেশবাসী ও সবার সহযোগিতা নিয়ে এক সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে চাই।
সিলেট অঞ্চল আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এবং মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক ও সিলেট জেলার বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা স্বর্ণালী চক্রবর্তীর যৌথ সঞ্চলনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে. এম আলী নেওয়াজ, যুগ্মসচিব মো. মঈন উদ্দিন খান, নির্বাচন কমিশনের উপপ্রধান ও নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আইসিটি ব্যবহারে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি (সিবিটিইপি) প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ মোস্তফা হাসান, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন, মৌলভীবাজার জেলা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন পাটোয়ারি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় প্রমুখ।
দিনব্যাপী কর্মশালায় অংশগ্রহণ করা বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ. এম. এম. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে আপনারা পক্ষপাতভাবে কাজ করবেন না। আগে পক্ষ নিয়ে কাজ না করলে চাকরির সমস্যা হতো। এবার সেটা নয়। তাই ভয়ের কোনো কারণ নেই। এবার কারো পক্ষ নিয়ে কাজ করলে অসুবিধা হবে। আমরা কিন্তু শক্ত অবস্থানে যাবো। কাজেই আপনারা সঠিকভাবে আইনকানুন মেনেই কাজ করবেন। সঠিকভাবে কাজ করলে আমরা সঠিকভাবে সুন্দর নির্বাচন উপহার দেবো।’
সিইসি আরো বলেন, ‘এবার প্রায় ৭০ হাজার লোকবল ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় কাজ করবে। বাড়ি-বাড়ি গিয়ে ভোটার নিবন্ধন করা হবে। এর ব্যত্যয় হবে না। গ্রামের কোনো এক জায়গায় সবাইকে একত্রিত করে ভোটার নিবন্ধন করা যাবে না। এতো লোকবল কাজ করবে তারপরও যদি নির্ভুল ও সমৃদ্ধ ভোটার তালিকা আমরা প্রস্তুত করতে না পারি তা হলে দেশের বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি ভাবমূর্তিরও ক্ষতি হবে।’
এ. এম. এম. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘কেবল নির্বাচন কমিশনের পক্ষে অবাধ, সুষ্ঠু, সুন্দর, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা সম্ভব নয়। এজন্য সবার সহযোগিতার প্রয়োজন।’
প্রবাসী ও রোহিঙ্গা ভোটার, নির্বাচনী আসনের সীমানা নির্ধারণ, জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটারদের ভোটদান ও নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় আগ্রহী করতে প্রচার-প্রচারণার বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সংস্কার কমিশন এ রকমের অনেকগুলো বিষয় নিয়ে কাজ করছে। আমরা তাদের পরামর্শ, মতামত ও সুপারিশের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।’
