কাল আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন মাহমুদুর রহমান

Date:

 নিউজ লিংক:-

ঢাকা, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ (বাসস) : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আমার দেশ পত্রিকার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান নিম্ন আদালতে কাল আত্মসমর্পণ করবেন। মাহমুদুর রহমানের পক্ষে আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বাসসকে আজ এ কথা জানান।

তিনি বলেন, পলাতক দেখিয়ে মাহমুদুর রহমানের অনুপস্থিতিতে এ মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়ে রায় দেয় বিচারিক আদালত। এডভোকেট মেজবাহ জানান, ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন তিনি। আমরা এ মামলায় আপিলের শর্তে জামিন চাইবো। মহানগর দায়রা জজ আদালতে আপিল করবো।

এ আইনজীবী বলেন, সাজার মেয়াদ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট আদালতের জামিন দেয়ার এখতিয়ার না থাকায় তাকে কারাগারে যেতে হতে পারে। কারাগারে তাকে যেন ডিভিশন দেয়া হয় সেই আবেদনও করা হবে। মাহমুদুর রহমান প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় এক সময় উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আইনানুযায়ী তিনি কারাগারে ডিভিশন পাবেন।
এডভোকেট মেজবাহ বলেন, মাহমুদুর রহমানকে মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন অভিযোগে সাজা দেয়া হয়। প্রশ্নবিদ্ধ বিচারিক প্রক্রিয়ায় তড়িৎ গতিতে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে বিচারের নামে প্রহসন করা হয়েছিল। রায় ঘোষণা করা বিচারকের ভূমিকাও ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি।

সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ এবং হত্যাচেষ্টার মামলায় গত বছরের ১৭ আগস্ট ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালত মাহমুদুর রহমান ও সাংবাদিক শফিক রেহমানসহ পাঁজজনের পৃথক দুই ধারায় সাত বছরের সশ্রম কারাদ- দেন। দ-প্রাপ্ত অপর তিন আসামি হলেন জাসাস নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ, রিজভী আহমেদ সিজার ও মিজানুর রহমান ভুঁইয়া।

আসামিদের দণ্ডবিধির ৩৬৫ ধারায় (অপহরণ) পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা অর্থদ- দিয়েছেন আদালত। জরিমানার টাকা অনাদায়ে তাদের আরও একমাসের কারাভোগ করতে হবে। এছাড়া একই আইনে ১২০-খ ধারায় (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) দুই বছরের কারাদ- ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দুই ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন।

মামলার অভিযোগ বলা হয়, ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরের আগে যে কোনো সময় থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনসহ বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত অন্যান্য দলের উচ্চপর্যায়ের নেতারা রাজধানীর পল্টনের জাসাস কার্যালয়ে, আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার আসামিরা একত্রিত হয়ে যোগসাজশে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমেরিকায় অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করেন। ওই ঘটনায় ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান ২০১৫ সালের ৩ আগস্ট বাদী হয়ে পল্টন মডেল থানায় মামলাটি করেন। ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

গতকাল  শুক্রবার  সকলে তুরস্ক থেকে দেশে ফিরেছেন মাহমুদুর রহমান। এক সময় বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় বিএনপি সরকারে দায়িত্ব পালন করেন। এসব দায়িত্ব পালন শেষে তিনি সাংবাদিকতায় নিজেকে যুক্ত করেন। দেশের জনপ্রিয় দৈনিক আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বিগত সরকারের ফ্যাসিবাদী আচরণের বিরুদ্ধে আমার দেশ পত্রিকায় লেখনির কারণে মাহমুদুর রহমানকে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে নির্মম নির্যাতন করা হয়। তিনি বিগত সরকারের সকল অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বরাবরই সোচ্চার ও আপোষহীন ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

Subscribe

spot_img

Popular

More like this
Related

ট্রাম্পের জয়ে সম্পর্কে বড় পরিবর্তন হবে না: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক:- ট্রাম্পের জয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে বড়...

শহীদ নাফিজের দেহ বহনকারী সেই রিকশা গণভবন জাদুঘরে

অনলাইন ডেস্ক:- বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ গোলাম নাফিজের দেহ বহনকারী...

ফ্যাসিস্টদের কাছে সমন্বয়ক শব্দটি এখন গালি: হাসনাত

অনলাইন ডেস্ক:- ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার ও তার দোসরদের কাছে...

আইনের চোখে পঞ্চদশ সংশোধনী অচল: বিএনপির আইনজীবী

অনলাইন ডেস্ক:- তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপ করে আনা সংবিধানের পঞ্চদশ...