নিজস্ব প্রতিবেদক : কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার আসলেই কত্তো বড় প্রশাসক? কত্তো বড় আমলা তিনি? রুলস অব প্রেসিডেন্সিতে তিনি যে ২৪ নাম্বার সারির একজন গোলাম তা কি জানা আছে তার? আমরা তা তো ভালো করেই জানি, এই তো কিছুদিন আগেও পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে উপসচিব হিসেবে খোলা বারান্দার কাছে আধাভাঙ্গা একটা চেয়ারে বসার সুযোগ ছিল তার। তার টেবিলটাও ছিল ঢিলেঢালা। কিন্তু কুমিল্লায় গিয়েই তিনি যে বেজায় দাপুটে হয়ে উঠেছেন সেটি জানা ছিল না।
কি অপরাধ ছিল কুমিল্লার কোমলমতি শিশু তাহসিনের? সে জেলা প্রশাসককে একটি ইনডোর প্লান্ট উপহার দিতে তার বাসার দরজায় হাজির হয়েছিল। আর তাতেই লাট সাহেব ডিসি বেজায় ক্ষেপে যান। ক্রোধে ফেটে পড়েন, বাস ভবনে দায়িত্বরত কর্মচারীদের অশ্রাব্য গালাগাল দেন-ঘটিয়ে ফেলেন তুলকালাম।
গাছ উপহার দিতে চাওয়ার অপরাধে শিশু তাহসিনকে আটকিয়ে এনডিসির মাধ্যমে তার সাংবাদিক বাবাকেও হাজির করান। স্টাফদের দেওয়া হয় শোকজ। এমনকি তাহসিনের বাবাকে ছেলের অপরাধের(!) জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয়।
এই ক্ষমা তো আপনার চাওয়া উচিত। নিজের অপকর্মের জন্য অনুতপ্ত হওয়া উচিত। আপনার মনে মনে এখনও ব্রিটিশ আমলের সাহেবীপনা লালন করার অপরাধে ক্ষমা চাওয়া উচিত দেশবাসীর কাছেও। আপনি বর্বর কাণ্ডের মাধ্যমে শিশু তাহসীনের কোমল হৃদয় তছনছ করে দিয়েছেন- এ জন্য শিশুটির কাছেও প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত আপনার। এই বয়সের শিশু কিশোরদের ক্ষমা চাওয়ার সভ্যতা শেখাতেও এই কাজটি করা খুবই দরকার মনে করছি।
ভাবতে পারেন! কি জঘন্য পর্যায়ের মানসিকতা নিয়ে বেড়ে উঠেছে এই ভৃত্য? এর কাছে তো দেশের মানুষ, জীবজন্তু এমনকি রাষ্ট্রও নিরাপদ নয়। তার অযোগ্যতা, বর্বরতার বিষয়াদি আগে কেন টের পায়নি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়? বিপিএটিসি এদের কি ধরনের প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মকর্তা বানানোর সার্টিফিকেট দিচ্ছে। সেখানে ব্যক্তি আচরণ ও ব্যবহার বিষয়ক কোনো শিক্ষা-দীক্ষা কি আদৌ দেওয়া হয়? পারিবারিক অনাচারে অসভ্যতায় বেড়ে ওঠাদের সরকারি সেবামূলক পরিভাষা শিক্ষার বিশেষায়িত কোর্স করানো খুবই প্রয়োজন।
কোন শ্রেণির অমানুষদের অভিভাবকত্ব দিয়ে জেলায় জেলায় পাঠানো হচ্ছে সেসব খতিয়ে দেখা দরকার। তারা তো জনসাধারণকে রাষ্ট্রীয় সেবা দিতে যাচ্ছে না। তারা জেলা-উপজেলায় যাচ্ছে- খবরদারিত্ব করতে, শাসন করতে, নিজেদের সাহেবীপনা দেখাতে। মো. আমিরুল কায়ছার নিজেও কুমিল্লায় জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেই মন ভোলানো ডায়ালগ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘কাগজে বা পাথরে নয়- মানুষের হৃদয়ে আমার নাম লেখাতে চাই। ‘ হ্যাঁ, তিনি গোটা দেশবাসীর হৃদয়েই বর্বর জালিম হিসেবে নিজের নাম খোদাই করে লিখাতে পেরেছেন। কুমিল্লারই কোনো এক উপদেষ্টার মৌন আশীর্বাদ থাকায় নাকি অসভ্যতা কে এখনও অপসারণ করা যায়নি- আশা করছি রবিবারের মধ্যেই তাকে প্রত্যাহার করা হবে।