পৃথিবী যতদিন থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথের দর্শন ও কর্ম বেঁচে থাকবে: ঢাবি উপাচার্য

Date:

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপিত

প্রেস বিজ্ঞপ্তি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেছেন, পৃথিবী যতদিন থাকবে ততদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কর্ম, চিন্তা-ভাবনা, আদর্শ ও দর্শন বেঁচে থাকবে। বঙ্গবন্ধু সারাজীবন কৃষক, শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের মুক্তির জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন, আর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতা, গল্প, গান, রচনা, সাহিত্য ও শিল্পকর্মে দরিদ্র্য কৃষক ও শ্রমিকের মুক্তির গান গেয়েছেন। তাঁরা উভয়ই অসাম্প্রদায়িক চেতনা ধারণ, উগ্রজাতীয়তাবাদ পরিহার এবং আত্মশুদ্ধির পন্থা অবলম্বন করেছেন। ‘সোনার বাংলা স্বপ্ন ও বাস্তবতা: রবীন্দ্রনাথ থেকে বঙ্গবন্ধু’ প্রতিপাদ্যকে ধারণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ ০৮ মে ২০২৪ বুধবার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ সম্মাননীয় অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হক। রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল আরও বলেন, রবীন্দ্রনাথের চিন্তা-চেতনা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায়িক চেতনা, গণতান্ত্রিক ও মানবিক মূল্যবোধ, দেশপ্রেম, মাটি ও মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা নিয়ে সারাজীবন আন্দোলন- সংগ্রাম ও অপরিসীম ত্যাগের মাধ্যমে আমাদেরকে স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র উপহার দিয়েছেন। মানুষকে ভালোবেসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ব্রিটিশ সরকার প্রদত্ত নাইটহুট উপাধি ত্যাগ করেছিলেন, ঠিক তেমনি নিজের জন্য খোঁড়া কবরের সামনে দাড়িয়ে পাকিস্তানি শাসকদের সাথে বাঙালীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও মুক্তির ব্যাপারে আপোস করেননি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এভাবেই বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথের দর্শন ও চিন্তা-ভাবনায় অপূর্ব মিল রয়েছে।
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর কবিতা ও সাহিত্য কর্মে সমাজের নানা অসংগতি, কুসংস্কার, বৈষম্য, মানুষের কষ্ট, প্রকৃতি, পরিবেশ, মানবপ্রেমসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেছেন। বঙ্গবন্ধু এবং রবীন্দ্রনাথ উভয়ই উগ্রজাতীয়তাবাদ বিরোধী ছিলেন। তাঁরা উভয়ই বিশ্বাস করতেন উগ্র জাতীয়তাবাদ সমাজে সংঘাত সৃষ্টি করে। অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন সমাজ প্রতিষ্ঠায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন্তাভাবনা ও দর্শন সকলের সামনে সবসময় তুলে ধরতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হক মূল প্রবন্ধে বলেন, সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু ও রবীন্দ্রনাথের ভাবনায় ও কর্মে অনেক মিল ছিল। বাঙালির ন্যায়সংগত অধিকার আদায়ে আত্মশক্তি অর্জনে উভয়ই সোচ্চার ছিলেন। রবীন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ সৃজনশীল কাজগুলো তৎকালীন পূর্ববঙ্গের গ্রাম্যজীবন ও পদ্মাপাড়ের মানুষের জীবন নিয়ে রচিত। তিনি যেমন লেখনীর মাধ্যমে মানুষের চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন করে সমাজ সংস্কার করতে চেয়েছেন, তেমনি বঙ্গবন্ধু তাঁর দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনে অপরিসীম ত্যাগের মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় এককভাবে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
আলোচনা পর্ব শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগ ও নৃত্যকলা বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

Subscribe

spot_img

Popular

More like this
Related

কেন্দ্রিয় নির্দেশনা অমান্য, ইউপি নির্বাচন করতে নিতাই রায়ের নির্দেশ

মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধি:- আওয়ামী সরকারের সময় যে সকল নেতাকর্মীরা...

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দাউদকান্দিতে বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ২

মোঃ ইব্রাহিম খলিল  দাউদকান্দি: জমি চাষের টাকা নিয়ে দুই...

চকবাজার থানা ইউনিট দায়িত্বশীল শিক্ষা বৈঠক অনুষ্ঠিত

ইসমাইল চৌধুরী, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের শূরা সদস্য ও আন্তর্জাতিক...

চট্টগ্রাম প্রতিদিন অফিসে সংঘবদ্ধ হামলার চেষ্টায় ক্ষোভ, প্রতিবাদ, নিন্দার ঝড়

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রাম নগরীর চেরাগী পাহাড় এলাকায় অবস্থিত দৈনিক...