মো: ফিরোজ হোসেন: আলহাজ্ব অ্যাডভোকেট মোঃ শাহ আলম দেশের ধনাঢ্য ব্যবসায়ি হিসেবে পরিচিতি পেলেও মূলত তিনি স্বনামধন্য একজন আইনজীবী। বাংলাদেশে প্রথমসারির একজন শিল্প উদ্যোক্তা ও সফল ব্যবসায়ি হিসেবে তিনি সমাদৃত। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ম্যাটাডোর গ্রুপে প্রায় ৪ হাজার কর্মচারি এবং কর্মকর্তা জীবিকা নির্বাহ করছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সকল চাকুরীজীবীদের যথাসময়ে বেতন পরিশোধ করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সুনাম রয়েছে এই জনহিতৈষী সমাজসেবকের। পুরান ঢাকার এই কৃতি সন্তান শাহ আলম উকিল নামে বেশি পরিচিত এবং তিনি শুরু থেকেই লালবাগ হাজারীবাগ এলাকার জাতীয়তাবাদী চিন্তা চেতনার একজন উদারপš’ী সমাজসেবক, ইসলামিক চিন্তাবিদ ও জনহিতৈষী মানুষ হিসেবেও সুপরিচিত। এলাকার গরীব দুঃখীদেও আইনের সেবাসহ আর্থিকভাবে তিনি সাহায্য দেয়ায় পুরান ঢাকায় তিনি একজন দানবীর হিসেবে পরিচিত। তবে তিনি দান করার ক্ষেত্রে ছিলেন প্রচার বিমুখ। গণমাধ্যম বা মিডিয়া থেকে দূরে থেকেছেন।
এমন সজ্জন ব্যক্তির জীবনাচরনে উজ্জীবিত হয়ে তাঁর সাথে আড্ডা দিয়েছেন সাংবাদিকেরা। জীবন সায়াহ্নে এসে তাঁর চাওয়া-পাওয়া এবং সফলতা-ব্যর্থতার গল্প শুনিয়েছেন তিনি। দানবীর শাহ আলম বলেন, আমার মতো ক্ষুদ্র মানুষ হিসেবে যা করার আমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করেছি। এলাকাবাসীর জন্য ভালো কিছু করে যেতে চেয়েছি। আমি আমার জানামতে এলাকাবাসী এবং আমার স্বজনদের মঙ্গল কামনা ছাড়া কোনদিন অমঙ্গল কামনা করি নাই। ১৯৮০ সালে ম্যাটাডোর পেন দিয়ে ব্যবসায়িক জগতে পা রাখি। আমি এবং আমার শ্রমিকদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ম্যাটাডোর গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ হিসেবে বর্তমানে দেশে এখন সুপ্রতিষ্ঠিত শিল্প প্রতিষ্ঠান। স্টেশনারি, ব্যক্তিগত যত্ন পন্য, খাদ্যপন্য, নির্মাণ সামগ্রী, প্লাস্টিক পণ্য সামগ্রী, বিনোদন এবং স্বা¯’্য সেবা বা হাসপাতালসহ অসংখ্য প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছি।
আইনজীবী শাহ আলম বলেন, আমি যা করতে পারিনি, আমার সন্তানেরা তা করবে এটাই আল্লাহর কাছে দোয়া কামনা করছি। আপনারা সবাই আমার ও আমার সন্তানের জন্য দোয়া করবেন। তিনি বলেন, এলাকায় রফিকুল ইসলাম মোল্লা মাদ্রসা এবং মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণ করেছি যার ব্যয় কোটি টাকার উপরে। হাজারীবাগ বোরহানপুর জামে মসজিদ তৈরি করেছি সৌদি আরবের মসজিদের আদলে। কাজিরবাগ মসজিদ মাদ্রাসা, আজিম উদ্দিন হুজুরের এতিমখানা, ম্যাটাডোর স্টাফ কোয়ার্টার মসজিদ, চাঁদপুর হাজিগঞ্জ জয়সারা চৌধুরী বাড়ী মসজিদ, মাদ্রাসাসহ এতিমখানায় আমি সাধ্যমত দান করি। এছাড়া ঢাকার কামরাঙ্গীর চরের অনেক মসজিদ ও মাদ্রাসা নির্মানে অর্থ সহায়তা দিয়েছে। এছাড়াও সিলেট, হবিগঞ্জ জেলায় নির্মিত মসজিদ ছাড়াও সারাদেশের শত শত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও মসজিদে আর্থিক সহায়তা দিয়েছি। এসব কাজের বাইরেও মনে শান্তি আনে এমন কাজের তালিকায় সবার উপওে রয়েছে অস্ব”ছল মানুষদের হজ্ব করানো। এই কাজটা করে আমি সবচেয়ে বেশি তৃপ্তি পাই।
ম্যাটাডোরের কর্মচারীদের নিয়ে ভাবনা প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠাতা শাহ আলম বলেন, ম্যাটাডোর আমার যৌবনের প্রথম উদ্যোগ। এই উদ্যোগের কারণেই আজ আমি মানুষের উপকার করতে পারছি। সুতরাং এখানকার কর্মচারিদের জন্য কোয়াটার, তাদের সন্তানদের জন্য আর্থিক সহায়তা, শিক্ষাবৃত্তি প্রদান, এলাকার বেকারত্ব দূর করেছি। তাদের স্বা¯’্যসেবা নিশ্চিত করতে এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেছি ম্যাটাডোর হাসপাতাল।
রাজনীতিতে অংশ নেয়ার কোনো আগ্রহ আছে কি না জানতে চাইলে মহান এই সমাজসেবক বলেন, আমি একজন আইনজীবী ও ব্যবসায়ি। সরকার আসে সরকার যায়। আমি সরাসরি কোন দলকেই সাপোর্ট করি না। আমার সন্তানেরাও তাই। আমার একটাই দল, আমি মুসলিম, আমি আল্লাহর লোক। বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় সকলেই বলতো আমি তাদের লোক, আওয়ামী লীগের সময় বলেেতা আমি তাদেও লোক। কিš‘ দিন শেষে আমি একজন আইনজীবী ও ব্যবসায়ি। পেশাই আমার নেশা। সাধারন মানুষের উপকারে আসি এর চেয়ে বড় তৃপ্তি আর কিছু নাই।
তিনি বলেন, কর্মজীবনের শুরুতে স্বাভাবিকভাবে যুদ্ধ চালাতে হয়েছে। দিন-রাত পরিশ্রমের পর দাঁড়িয়েছে একটার পর একটা প্রতিষ্ঠান। সেখান থেকে পেয়েছি আর্থিক স্ব”ছলতা। পরবর্তীতে আমার সন্তানদের মানুষের মতো মানুষ করতে হয়েছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের জন্য ভালোকিছু করতে চেয়েছি, যার সবটুকুই দৃশ্যমান। আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি। বাকিটা বলতে পারবে আমার এলাকাবাসী এবং আপনারা যারা গণমাধ্যমে কাজ করছেন।
মোঃ শাহ আলম, তিনি শুধু একজন সফল উদ্যোক্তাই নন, একজন সফল পিতাও। তাঁর এক ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের অধ্যাপক, অন্যজন একজন ডাক্তার। তার এক ছেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক এবং চেয়ারম্যান। তাঁর দ্বিতীয় ছেলে মোঃ জাহাঙ্গীর আলম এলাকার বিভিন্ন স্কুল এবং মসজিদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
একজন শাহ আলম এখন অনেক গরীব-দুঃখী মানুষের আশ্রয়¯’ল। কন্যাদায়গ্র¯’ পিতার আশার আলো। মেহনতি শ্রমিকদের জন্য দরদী আত্মা। বাংলাদেশের প্রতিটি কোনায় কোনায় দানবীর শাহ আলমের মতো জনদনদী সমাজসেবক জন্ম নিয়ে দেশ ও জনকল্যানে ব্রত হবে- এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।