চট্টগ্রাম প্রতিনিধি //চট্টগ্রামের বাঁশখালীর গন্ডামারা ইউনিয়নে এসএস পাওয়ার প্রকল্পের নির্মাণকালীন ক্ষতির প্রতিবাদে এবং ৬ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ছাত্র-জনতার মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত এই মানববন্ধনে শতাধিক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা অংশগ্রহণ করেন।”
এসএস পাওয়ারের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত যোগাযোগ ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ অন্যান্য দাবি নিয়ে মানববন্ধন করেছে ঐক্যবদ্ধ ছাত্র-জনতা!
এসএস পাওয়ার নির্মাণকালীন সময়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ড্রেনেজ সিস্টেম সংস্কার, স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিত, পরিবেশ সংরক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং শতভাগ বিদ্যুতায়নের দাবিতে “ঐক্যবদ্ধ ছাত্র-জনতা ৯নং গন্ডামারা ইউনিয়ন”-এর উদ্যোগে ১৫ নভেম্বর, শুক্রবার বিকাল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য তুলে ধরেন। তা হলোঃ
বিদ্যুৎ ও কর্মসংস্থান বিষয়ে আবদুল মান্নান বলেন, “আমরা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শতভাগ বিদ্যুতায়ন চাই। এসএস পাওয়ারের কাছ থেকে আমরা কর্মসংস্থানের সুযোগ পাওয়ার আশা করেছিলাম। কিন্তু স্থানীয় যুবকরা সেখানে কাজ পাচ্ছে না। আমাদের এ বঞ্চনা দূর করতে হবে।”
৬ দফা দাবির বিষয়ে আমিনুর রশিদ বলেন, “স্থানীয় অধিকার রক্ষায় আমাদের ৬ দফা দাবি রয়েছে। এর মধ্যে পরিবেশ সংরক্ষণ, যোগ্যতাভিত্তিক কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন, ড্রেনেজ ও সড়কব্যবস্থা সংস্কার অন্যতম। এসএস পাওয়ার কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের কাছে এসব দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান জানাই।”
কৃষি জমি পুনরুদ্ধারের বিষয়ে হাসান নূর বলেন, “প্রকল্প নির্মাণকালে আমাদের উর্বর কৃষিজমি নষ্ট হয়েছে। এই জমি পুনরুদ্ধারের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এসব জমি পুনরায় চাষযোগ্য করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
যোগাযোগ ব্যবস্থার বিষয়ে ছরওয়ার বলেন, “গন্ডামারার যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। সড়কগুলো সংস্কারের জন্য প্রশাসনের কাছে বারবার আবেদন করেও কোনো ফল হয়নি। আমরা দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ চাই।”
পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ে মোজাহিদ বলেন, “এসএস পাওয়ার প্রকল্পের কারণে গন্ডামারার পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা চাই পরিবেশ সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক। পাশাপাশি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পরিবেশ নিশ্চিত করা হোক।”
স্থানীয় অধিকার রক্ষার বিষয়ে জাহেদ মাহমুদ বলেন, “গন্ডামারার মানুষ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্মসংস্থান ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত না করা অন্যায়। এই বৈষম্য অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।”
জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বোরহান বলেন, “এসএস পাওয়ার প্রকল্পের প্রভাবে জলবায়ুর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। গন্ডামারা এলাকার জলবায়ুর ভারসাম্য রক্ষায় প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।”
জলাবদ্ধতার বিষয়ে জয়নাল আবেদীন বলেন, “গন্ডামারায় ড্রেনেজ ব্যবস্থার অবনতির কারণে জলাবদ্ধতা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বর্ষার সময় পুরো এলাকা পানিতে ডুবে যায়। দ্রুত ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার করা না হলে আমাদের ভোগান্তি আরও বাড়বে।”
মানববন্ধনে বক্তাদের বক্তারা বলেন, এসএস পাওয়ার প্রকল্পের প্রভাবে স্থানীয়রা যেমন উন্নতির আশা করেছিল, বাস্তবে তারা ঠিক তার বিপরীত পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। প্রকল্প কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনকে স্থানীয়দের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে এবং তাদের অধিকার রক্ষায় দায়িত্বশীল হতে হবে।
এই মানববন্ধনে শতাধিক শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। বক্তারা দ্রুত দাবি বাস্তবায়নের জন্য প্রশাসন ও প্রকল্প কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।