ভৌগোলিক অবস্হান ফরিদপুর শহরের দক্ষিন- পূর্ব দিকে।উত্তরে ভাজনডাঙ্গা মান্দার তলা খালের উত্তর পাশ,পশ্চিমে রাজেন্দ্র কলেজ অনার্স শাখা তথা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, দক্ষিনে বিলগজারিয়া, গদাধরডাঙ্গী পর্যন্ত,পুর্বে ডিক্রীর চর ইউনিয়ন সীমানা পর্যন্ত।আজ থেকে ৪০/৪৫ বছর আগে গ্রামের পাশ দিয়ে বহমান ছিল ভূবেনশ্বর নদী।গ্রামের মাঝ দিয়ে চলে গিয়েছে মান্দার তলা খাল,বিলমামুদপুরের মধ্য দিয়ে গেরদা হয়ে বাখুন্ডা পর্যন্ত।একসময় ভূভেনশ্বর হয়ে লঞ্চ, স্টীমার চলাচল করতো।আর মান্দার তলা খালে ঢাকার ব্যবসায়ীরা আসতেন হাড়িপাতিল নিয়ে,নারিকেল নিয়ে যেতেন ঢাকায়।মান্দার তলা খাল দিয়ে নৌকায় করে দক্ষিনের সাখে যোগাযোগ হতো- নগরকান্দা,সালথা সহ অন্যান্য স্হানে।প্রচুর পরিমান মাছ পাওয়া যেত তখন এই নদীতে।তখন বন্যার পানি আমাদের কাছে উৎসবের মতো মনে হতো।গ্রামে গ্রামে কিশোর – কিশোরীরা কলা গাছের ভেলা ভাসিয়ে আনন্দ উপভোগ করতো।একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল সাদীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয।তখন বিদ্যালয়ের প্রতি এলকার মানুষের নিবিড় সম্পর্ক ছিল পড়া লেখা ছিল আনন্দের বিষয় ছিল স্যারদের নিগাদ ভালবাসা,স্নেহ,শাসনের প্রচলন।কালক্রমে তা হারিয়ে যায়।ছিল একটি মাত্র মসজিদ।সাদীপুর বর্তমান বাজার সংলগ্ন।আমি দেখেছি মান্দার তলা খালের এপার ওপার কয়েকটি দোাকন ছিল।এপারে ছিল মজিদ শিকদারের দোকান।মুরুব্বি দের নিকটে শুনেছি মজিদ শিকদারের দোাকনে একটি রেডিও ছিল স্বাধীনতা পিরিয়ডে সবাই খবর শুনতে যেতেন।
তখন এলাকার সকলের সাঝে সৌহার্দ্য পূর্ণ সম্পর্ক ছিল।ছিল না সমাজিক ভেদাভেদ। সকলেই ছিল একে অপরের সাথী।এলাকায় কোন উৎসব হলে সকলে মিলে মিশে কাজ করতেন।
বড় বোনেরা পুতুলের বিয়ের আয়োজন করতেন।বরযাত্রীতে যেতাম আপ্যায়ন বিয়ের মতোই অনুষ্ঠানে। মূল বিয়ে জতো পালকীতে চড়ে সে যে কি আনন্দ।কালের পরিক্রমায় প্রথমো রিক্সা,তারপর মাইক্রোবাস প্রচলন শুরু হলো।মজার ছিল রিক্সায় করে নববধুকে কাপড়ে ঢেকে নিয়ে যাওয়া হতো।গ্রামের মুরুব্বিো সকলের সন্তান দের শ্সন করতেন বিশেষ করে সন্ধ্যার পর দোকান পাঠে থাকা যাবে না।বাচ্চারা স্যারদের দেখল দৌড়ে পালিয়ে যেত- আর এখন কারটা আর বললামই না।যদিও এতে আসাদের রাস্ট্রপদ্বতি অনেকটা দায় এড়াতে পারেন না।প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মহিলা শিক্ষকের আধিক্য পুরুষ শিক্ষক হারিয়ে গেলেন।মহিলারা শহর থেকে এসে স্কুল শেষ করে আবার শহরে চলে যান।েতে করে বিকেল বেলা এলাকা শিক্ষক শুন্য হয়ে পড়ে।তািতো ছেলেেপেলেদের অবাধ স্বাধীনতা লাভ করে।ধীরো ধীরে তা নৈতিকতা হারায়।
বোনেরা ভাইয়েরা মিলো কপালটুনি,দাঁড়িয়া বাধা,সাতচারা,লুডু,ঘুরি উড়ানো ইত্যাদিতে মেতে থাকতো।
আমার স্পষ্ট মনো আছে আমার বড় বোন শিশু কালে যখন আমার বয়স চার বছর সাজিয়ে কাজিয়ে খেলার মাঠে নিয়ে যেতেন এমন করে আরো অনেকেই আসতেন।আমরা মাঠে সিনিয়র দেরেফুটবল খেলা দেখতাম।আনন্দে স্কুলোর টিন থাপ্পর মেরে মজা নিতাম।
নবান্ন উতসব ধান কাটা হয়ে গেলে প্রতি গৃহস্হালির বাগীতে পিঠা খাওয়ার ধুম পগতো আত্বীয় স্বজন দের দাওয়াত করা হতো।
নিয়ারা হাল ছিল ঐক্যের অপুর্ব উদাহরন সকল বাড়ীর গরুর হাল দিয়ে জমিচাষ করতেন। এভাবেেএক এক তিন সকলের জমিতেই চাষ হতো।দুপুরে মাঠের মধ্যেই শোল মাছ আর লাউয়ের মিশ্রন সেই সুস্বাদু খাবার ছিল আর রাত্রে দেশাল মোরগের ঝাল তরকারিতে মজে উঠতো খাবারের বৈঠক। সাথে ভিজানো পিঠা বা পায়েশ।
প্রতিবেশীর সাথে সম্পর্ক ছিল মধুর।বিপদে সকলের পাশে সকলেই।
হুক্কা– সন্ধ্যার পর বিশেষ বাড়ীতে কাচার ঘরে বসতো জাল বুনুনো,পলো তৈরী,আর হুক্কার টান।
আমাদের সমযই দেখেছি হাডুডু খেলার আয়োজন। গ্রামে গ্রামে বৃষ্টি নামার গান হইতো।বিশেষ দিনে ছিন্নির ব্যবস্হা থাকতো পৌষ মাসে গরু দৌড়ানোর ব্যবস্হা হতো এটিই ছিল বিনোদনের অন্যতম।
কোন বাড়ীর অনুষ্ঠানে মাইক বাজানো হতো।মাইক অপারেটরকে কি যত্নে রাখা হতো তা আজ কোন বাড়ীর জামাইগন বর্তমান পা না।
লজিং টিচার আমাদের গ্রামে যেন প্রতিবারের বড় ছেলের দায়িত্ব পালন করতেন।কেউ কেউ তো এলাকার নামকরা জামাই ও হয়ে আছেন।
এলাকার সমস্যা হলে মামলা মোকদ্দমা ছিলনা।মাতবরের মাধ্যমো তা নিষ্পত্তি হতো।
বিনোদনের জন্য বিচার গানের আয়োজন করা হতো,মরহুম আয়নাল চাচা,জালাল বয়াতী,হালিম বয়াতী,হাজেরা বয়াতী,চা মিয়া বয়াতী প্রমুখ।তখন আমাদের এলকার থে আটরশিতে অনেক লোক যেতেন।পার্শবর্তী বিলমামুদপুরের আল্লাইদিলে সাধুর বাড়ীর ওরস উল্লেখ যোগ্য।
একবার ১৯৮৬ সনে সাদীপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নাটকের আয়োজন হয়েছিল।কৃষকের আর্তনাত,গরীব কেনো কাঁদে।
ঐটাই ছিল আমার দেখা সামাজিক অনুষ্ঠানের অন্যতম।
বছরে একদিন গেরদার দিঘী ও বিলমামুদপুরের কোলে সাছ ধরার উৎসবে সামিল হতেন।
মক্তবে সবাই যেতেন আরবী শিখতেন মরহুম মুসা মৌলভীর কাছে,আহমম্দ খানসামার কাছে।
তারাবীর নামাজ কিযে আনন্দের ছিল।এলকা ভিত্তিক বাড়ীতে আয়োজন হতো।
এলাকার একমাত্র হিন্দু বাড়ী সত্য স্যারের বাড়ী ওনারাও মিলেমিশে আনন্দ উপভোগ করতেন।
চুল ছাটার কথা না বললেই নয় সকাল বেলা গিয়ে বসে থাকতে হতোে ঘন্টার পর ঘন্টা অবশেষ মাথা নিচু করে কোন রকম নড়াচড়া ছাগা চুপচাপ বসে থাকতে হতো।
গজারিয়া হাট এবং ফরিদপুরের হাট থেকে আখের গুর,পাঠ বিক্রি করে ৫ টাকা কেজি ধরে ইলিশ কিনে ভাতুরী এখন শুধুই স্বপ্ন
এ যুগের বাচ্চাদের নিকটেে গল্প করলে বিশ্বাস করতেই চাইবে না।তবু সব সত্যই ছিল
মুরগী চুরি করে খাওয়া মায়েরা তা আনন্দের সহিত নিতেন।সকাল বেলা ঠাট্টা করে বলতেন আমাদের কে একটু দিয়েই খেতে পারতি।
যাই হোক এ ঘটনাকালীন অনেকেই এখন এই দুনিয়ায় নেই।
আল্লাহতায়ালা সকল কে মাফ করে দিন।
আমিন।
বিঃদ্রঃ টাইপিং এ ভুল হতে পারে।
শুদ্ব করে পড়বেন প্লিজ।
লেখক-.
মাইনুল হাসান
সহকারী প্রধান শিক্ষক
তালমা নাজিমুদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়।