গোপন সমঝোতায় চোরাকারবারিদের সহযোগিতার অভিযোগ ওসি দেলোয়ারের বিরুদ্ধে

Date:

বিশেষ প্রতিনিধি :  গোপন সমঝোতায় চোরাকারবারিদের সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেলোয়ারের বিরুদ্ধে।
শুধু চোরাচালাইেন সীমাবদ্ধ নয়, মামলা গ্রেফতার বাণিজ্য,বিভিন্ন খাতে মাসোহারা আদায়,জাদুকাটা নদীর রাষ্ট্রীয় সম্পদ খনিজ বালি পাথর চুরি থেকে ঘুস আদায়ে সিদ্ধহস্ত উঠেছেন ওসি।
তাহিরপুর থানায় যোগদানের পর থেকেই থানা ছাড়াও থানা এলাকার হাওর ও সীমান্ত জনপদে থাকা বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র, টেকেরঘাট অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের কিছু অসৎ সদস্যদের ব্যবহার করে সীমান্তে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে নিয়ে আসা চোরাচালানের মাধ্যমে এমনকি নৌপথে চুরি করা কয়লা, চুনাপাথর , ভারতীয় সেখ নাসির বিড়ি, চিনি, মসলা, ফলমুল,কসমমেটিকস, থান কাপড়, খাদ্যসামগ্রী , জাদুকাটা নদীর ইজারা বহি:র্ভুত সীমানায় পরিবেশ ধ্বংসী সেইভ মেশিনে রাষ্ট্রীয় সম্পদ সম্পদ খনিজ বালি পাথর চুরিতে গোপন সমঝোতায় সহায়তা করে প্রতিদিবারাত্রী লাখ লাখ টাকা ঘুস আদায়ে সিদ্ধ হস্ত হয়ে উছেন বলেও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে ওসি দেলোয়ারের বিরুদ্ধে।
উপজেলার সীমান্তবর্তী লাউরগড় ও বারেকটিলা কেন্দ্রীক দুটি চোরাকারবারি চক্রের নিকট থেকে ১ লাখ করে দুই লাখ টাকায় ভারতীয় খাদ্য সামগ্রী (ফুসকা,পাস্তা, কমলা ,আপেল, আনার, চিনি) চোরাচালানে সহযোগিতা করে আসছেন ওসি দেলোয়ার,বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রর এসআই আমিনুর রহমান।
একই সীমান্ত ও জাদুকাটা নদী থেকে ইজারাবিহিন পাথর মহালের আড়ালে সড়ক পথে পাথর সড়িয়ে নিতে, বাংলা কয়লার নামে চোরাচালানের কয়লা থেকেও মাসোহারা নিচ্ছেন ওসি এবং তার অনুসারীরা।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার বড়ছড়া, চারাগাঁও, বাগলী স্থল শুল্ক ষ্টেশনকে কাজে লাগিয়ে শতাধিক চোরাকারবারিদের গোপনে লালন করছেন ওসি ও টেকেরঘাট অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের কিছু অসৎ অফিসার। শুল্ক ফঁকি দিয়ে ভারত থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে নিয়ে আসা ভারতীয় জ¦ালানী কয়লা, চুনাপাথর কিছু অসৎ আমদানিকারকের ডিপোতে মজুদ করিয়ে পরবর্তীতে ভুয়া চালানপত্র, মিনিপাস, পুরাতন এলসির বিল অফ এন্ট্রির ফটোকপি ব্যবহার করিয়ে নৌ পথে কয়েক হাজার মেট্রিক চোরাচালানের কয়লা -চুনাপাথর নিরাপদে সরিয়ে নিতে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ওসি ও তার লালিত সোর্স এবং টেকেরঘাট অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের এসআই আবুল কালাম চৌধুরী, এএসআই কার্তিক চন্দ্র পাল।
তাহিরপুরে থাকা বিআইড্রব্লিউটি নামে অতিরিক্ত চাঁদাবাজি,ইজারাবিহীন শ্রীপুর-ডাম্পোর বাজার খেয়াঘাটের আড়ালে কোটগাড়ির নামে পাটলাই নদীর নৌ পথে চাঁদাবাজি, জাদুকাটা নদীর ঘাগড়া ঘাটের চাঁদাবাজি, বড়ছড়া, চারাগাঁও, বাগলী শুল্ক ষ্টেশন ও জাদুকাটা নদীর ইজারাদার চক্রকে অনৈতিক সুবিধা দিয়ে গোপনে লাখ লাখ টাকা ঘুস আদায় করছেন গুনধর ওসি দেলোয়ার।
জাদুকাটা নদী থেকে সেইভ মেশিন চালানোর বিপরীতে প্রতিসেট সেইভ থেকে প্রথম দফায় ৩ হাজার পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে প্রতিঘনফুট বালি থেকে দুই (২) টাকা হারে রয়্যালটির সাথে ঘুস আদায় করিয়েছেন ওসি। ওই টাকা একজন সাবেক চেয়ারম্যান প্রতিরাতে থানায় পৌছে দিতেন ওসির হাতে। ওসি ওই সাবেক চেয়ারম্যানকে নিয়মিত থানার ম্যাসে আপ্যায়ন করাতেন।
থানার সামনের সড়ক পথ ব্যবহার করে ভারতীয় চিনি,পেয়াজ, মসলা,কসমমেটিকসের পিক যাতায়াত করলেও ওসির ইশারায় অন্য পুলিশ অফিসারগণ নিরব থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। একাধিক অটো রিক্সায় কওে নিয়ে যাওয়া চিনির বড় চালান আটকের পরও ওসি চিনির চালান ছেড়ে দেন।
থানা সদর, বাদাঘাট, বালিজুরি, শ্রীপুর বাজার, একতাবাজার, লাকমা,বড়ছড়া,সহ পুরো থানা এলাকা জুড়ে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক ভারতীয় সেখ নাসির বিড়ি কারবারি রয়েছে।
থানা থেকে মাসোহারা দিয়ে গোপন সমঝোতায় আনা স্টাইকের (অলিখিত) মাসিক চুক্তির নামে ভারতীয় বিড়ি ব্যবসার আড়ালে বিড়ি চোরাকারবারিরা বিদেশি মদ, গাঁজা, ইয়াবা কারবার চালিয়ে গেলেও ওসি এসব চোরাকারকার ও চোরাকারবারিদের প্রতিরোধের নামে দায়সারা ভাব দেখান বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ঘুস প্রদানকারী চক্র ওসিকে ঘুস দেয়ার বিষয়ে মুখে কুলূপ এটে থাকলেও ওসি ও চাঁদাবাজ, চোরাকারবারি চক্র,জাদুকাটা নদীর খনিজ বালি পাথর চুরি কান্ডে অনেকটা সাধারন মানুষজনের মধ্যে স্পট হয়ে উঠেছে ওসি থানার আইনশৃস্খলা,মাদক,কয়লা,ভারতীয় বিড়ি,চিনিসহ সব ধরণের চোরাচালান প্রতিরোধে অদৃশ্য কারনে নিরব থাকলে লাখ লাখ টাকা গুস আদায়ে সরব রয়েছেন।
তাহিরপুর থানায় পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের নেতাকর্মীদের নামে একাধিক মামলা থাকার পরও কয়েকজন চুনোপুটি গ্রেফতার করিয়ে দায় সেরেছেন ওসি।
অপরদিকে আত্বগোপনে থাকা মামলার আসামি আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের গ্রেফতার না করতে গোপনে সহযোগিতা করে লাখ লাখ হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে ওসি দেলোয়ার, বাদাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র, টেকেরঘাট অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের কিছু অসৎ অফিসারদের বিরুদ্ধে।
ওসি দেলোয়ার ব্রাম্মণবাড়িয়া জেলায় হওয়ার সুবাধে তাহিরপুর থানা এলাকায় বসবাসরত ওই জেলার বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দারা, চাঁদাবাজি,কয়লা-চুনপাথর,ভারতীয় বিড়ি, চিনি, মাদক, কসমমেটিকস চোরাকারবারিরা, খনিজ বালি পাথর চুরি কান্ডে জড়িতরা ওসির দাপট দেখিয়ে বীরদর্পে তাদের কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও নানা শ্রেণি পেশার মানুষজন অভিযোগ তুলেছেন।,
মঙ্গলবার কয়েকদফা তাহিরপুর থানার ওসি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের নিকট থাকা সরকারি মোবাইল ফোনে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বক্তব্য জানতে কল করা হলেও ফোন কল ধরেননি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

Subscribe

spot_img

Popular

More like this
Related

ভূরুঙ্গামারীতে মাদক বিরোধী অভিযানে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে আসামী হয়ে হাজতে আছেন সাংবাদিক আনোয়ার হোসেন আরিফ

আব্দাহিয়ুর রহমান আপেল: কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীতে মাদক বিরোধী অভিযানের তথ্য...

শ্রীমঙ্গলে হাজী সোনা মিয়া সুরজান বিবি আলিয়া মাদ্রাসায় মতবিনিময়

ইসমাইল মাহমুদ, মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে যুগোপযোগি আলেমে দ্বীন...

সদর দক্ষিণে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামী গ্রেফতার

কুমিল্লা প্রতিনিধি : আজ ১২ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ বিকেলে...

কুমিল্লায় ডিএনসি কর্তৃক ০৩ কেজি গাঁজাসহ আটক ৪  

কুমিল্লা প্রতিনিধি : ডিএনসি কুমিল্লার উপপরিচালক চৌধুরী ইমরুল হাসান...