রূপালীদেশ রিপোর্ট: বাজার থেকে পণ্যের দাম বাড়িয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগী ও সিন্ডিকেট। সরকারের উচ্চমহল এমন দাবি করলেও পুরোপুরি অস্বীকার করছে বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)। তবে মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতি বলছে, রাঘববোয়ালদের জাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছে ছোট ব্যবসায়ীরা। যার সবশেষ ভুক্তভোগী ক্রেতারা। ক্যাব বলছে, অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে অভিযুক্তের শাস্তি দিতে পারলে সুফল মিলবে বাজারে। মাঠ থেকে বাজারে আসতে কৃষিপণ্য পাঁচ থেকে ছয় বার হাত বদল হয়। হাত বদলের এই লম্বা পথে বাড়ে পণ্যের দাম। এতে ভোক্তাকে কিনতে হয় তিন-চার গুণ বেশিতে। আর এই আকাশ-পাতাল দামে লাভের বড় অংশই যায় মধ্যস্থতাকারীর পকেটে। আমদানি পণ্যেও ভোক্তাকে চাপে ফেলে ফায়দা লুটে নেয়ার এই চিত্র অভিন্ন। মিল থেকে ডিলারদের মাধ্যমে পণ্য বাজারে আসতেই মজুত করে ঝোপ বুঝে কোপ মারেন অনেকে।
এমন বিপণন কাঠামোর গোড়ায় গলদ রেখে ঘটা করে তদারকি সংস্থাকে অভিযান চালাতে দেখা যায় খুচরা বাজারে। ক্রেতাদের দাবি, ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের বলির পাঠা হচ্ছেন ভোক্তারা। বাজার নিয়ন্ত্রণে উৎপাদক থেকে খুচরা, সব পর্যায়েই সমান নজরদারি করতে হবে। বিভিন্ন সময় সরকারের উচ্চমহলও স্বীকার করেছেন দাম বৃদ্ধিতে দায়ী অসাধু ব্যবসায়ীরা। যদিও ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের নেতারা বলছেন, মধ্যস্বত্ত্বভোগী থাকলেও বাজারে নেই সিন্ডিকেটের অস্তিত্ব।
এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক হাজী মো. আবুল হাশেম বলেন, পণ্য-ক্রয় বিক্রয়ে মধ্যস্থকারীও একজন ব্যবসায়ী। সে সিন্ডিকেট নয়। তবে মধ্যস্থকারীরা যৌক্তিকভাবে ব্যবসা করছে কিনা, সেটি অবশ্যই নজরদারি করতে হবে। তবে পুরো ভিন্ন মত রাজধানীর ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী মৌলভীবাজার বণিক সমিতির।
সংগঠনটির সভাপতি হাজী সৈয়দ মো. বশির উদ্দিন বলেন, রাঘববোয়ালদের জাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছেন ছোট ব্যবসায়ীরা। এদিকে ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করা প্রতিষ্ঠান কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) বলছে, সিন্ডিকেট ধরতে কমাতে হবে হাতবদল। সংগঠনটির সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, বাজারে পণ্যের হাতবদলের পরিমাণ বেড়েছে। কয়েকধাপে হাতবদলের পর পণ্য পৌঁছাচ্ছে ভোক্তার হাতে। ফলে বাড়ছে দাম। এটি কমাতে হবে। এর আগে গত মার্চে ২৯টি পণ্যের দাম বেঁধে দিয়েছিল কৃষি বিপণন অধিদফতর। বাস্তবে যা বাজারে কার্যকর হতে দেখা গেছে সামান্যই।